সোমবার, বিকাল ৫:৩০
২০ জানুয়ারি, ২০২৫-৬ মাঘ, ১৪৩১-১৯ রজব, ১৪৪৬

মনোমুগ্ধ আয়োজন, উপভোগ্য এক সন্ধ্যা…

অনুজ দেব বাপু
সুরের মুর্ছনার সঙ্গে পায়ের তাল আর হাতের মুদ্রার অনন্য নৃত্যশৈলীতে দর্শকের চোখ মঞ্চের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। নানা দেশের বৈচিত্র্যময় পোশাকে ফ্যাশন দুরস্তদের অনন্য ক্যাটওয়াকে যেন মুগ্ধ হওয়ার পালা! বাদ যায়নি সুন্দর আবৃত্তি, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক কিংবা ইংরেজি নাটকও। ঝলমলে পোশাকে শিল্পীদের একের পর এক পরিবেশনা শেষ না হতেই মুহুর্মুহু করতালিতে মুখর হয়ে উঠছিল পুরো মিলনায়তন। বড় শিক্ষার্থীরাও তো বটেই, পরিবেশনায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরাও কম যায় না।
সেদিন প্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক আয়োজনের এরকম চিত্রে বিমোহিত হন আগত দর্শনার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিণত হয়েছিল চমৎকার এক মিলনমেলায়।
মনোমুগ্ধকর নানান আয়োজনে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিনাকল চার্টার্ড স্কুল এন্ড কলেজ (ইংরেজি ভার্সন)-এর বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলো শনিবার (৯ নভেম্বর)। নগরীর ষোল শহর এল জি ই ডি ভবনের অডিটোরিয়াম কক্ষে দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যতিক্রমী এ আয়োজন। বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। সম্মানিত অতিথিরা ও সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শাহীন আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের সাবেক ডিন ও বর্তমান শিক্ষক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এ বি এম আবু নোমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন এল জি ই ডি, চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আলী, প্রধান বক্তা ছিলেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সোলাইমান খান মাসুম। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শাহীন আলম।


প্রধান অতিথি প্রফেসর এ বি এম আবু নোমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর পারফরম্যান্স আমাকে মুগ্ধ করেছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও কেয়ারিং এর কারণেই বাচ্চাদেরকে অলরাউন্ডার করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।’ অধ্যক্ষ শাহীন আলম বলেন, ‘পিনাকল নগরীর ইংরেজি ভার্সনের বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী ধাঁচের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি কো-কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিস যেমন ডিবেট, ড্রামা, সংগীত, আবৃত্তি, আরবি, খেলাধুলাসহ সকল বিষয়ে সমান পারদর্শী। পরে ২০২৪-এর এসএসসির কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।


সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতেই দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেয় প্লে­ গ্রুপের শিক্ষার্থীরা। ‘গ্রীষ¥ বর্ষা শরৎ হেমন্ত’ সম্মেলক গানে অংশ নেয় ক্লাশ ওয়ানের শিক্ষার্থীরা। নার্সারি ও কেজি ক্লাশের মেয়ে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিল দলীয় নাচ।
কেজি, প্লে ও নার্সারি ক্লাশের শিক্ষার্থীরা দলীয় গানে অংশ নেয়। ‘সুখের লাগি’ গানের সাথে প্রার্থনার একক নৃত্য ছিল উপভোগ্য। দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেয় নার্সারি ক্লাশের শিক্ষার্থীরা। ‘কন্যারে’ গানের সাথে দলীয় নাচে অংশ নেয় নুসাইবা, হেনা, অথৈ, আয়েশা, আতিফা, আরিবা ও আলভিনা। ‘হোয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট টু বি’ শীর্ষক দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেয় কেজি ক্লাশের শিক্ষার্থীরা। ‘ফাগুনের মোহনায়’, বেণী খুলে’, ঝুমকা.. শিরোনামের গানের সাথে দলীয় নাচে অংশ নেয় ঐশি, ফাতিমা, সাবরিনা, মিমহা ও প্রার্থনা। গল্প বলায় অংশ নেয় ইলমা। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিল দলীয় নাশিদ। ‘আবার আসুক বায়ান্ন’ শীর্ষক গান পরিবেশন করে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।

দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করে প্রার্থনা ও মিমহা। ‘একদিন ছুটি হবে’-এ সমে¥লক গানে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে অংশ নেয়- মানাফ, অনির্বাণ, প্রিয়ন্তি, বর্ণিল, জারিফা, আয়েশা, ইশা, জাসরা, জোহা, আহনাফ, সায়হান, ইহাব, সিয়াম, তাহসিন, ওয়াজিহা, অর্ণব, ইমাদ ও আয়ান। দলীয় নৃত্যে ক্লাশ ওয়ানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অংশ নেয় সাউদা, সায়কা, আরিশা, ফারহা, উসরাত, ওয়ার্দা ও সুমাইরা। বাংলা ও ইংরেজি নাটকে অংশ নেয় সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। ‘মোর ভাবনারে’ শীর্ষক একক গান পরিবেশন করেন অবন্তী চৌধুরী। একক নৃত্য পরিবেশন করে সাজওয়া। ‘দেখেছি রূপসাগরে’ শীর্ষক একক গানে অংশ নেন শিক্ষক মো. আদনান। দৈ¦ত নাশিদে অংশ নেয় ইকরা, রাশদা, সাফওয়ান, মুনতাহা ও সাদ। আবৃত্তি করে সাউদা।

একক নৃত্য পরিবেশন করে হামজা। দলীয় নৃত্যে অংশ নেয় জেবিন, আসনা, সামিহা, তাইফা, আয়েশা, অথৈ, ইনাইয়া ও নুসাইবা। পাহাড়ি গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নুসাইবা, ইশা ও হৃদিতা। কবি জীবনানন্দ দাশ-এর ‘বনলতা সেন’ কবিতা আবৃত্ত করে শোনান শিক্ষক সাদিয়া। ফ্যাশন শোতে বিভিন্ন দেশের বৈচিত্র্যময় পোশাকে নজর কাড়েন শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নেয়-আতিফা, আরিবা, মঈনুল, মিমহা, বর্ণিল, আদি, মাওয়াজ, আখিল, কাশফিক, আবিয়াজ, আবিরা, শিবম, উমরানা, ঐশি, ফাতিমা, প্রিয়ন্তি, হাসান, সাউদা, সাজওয়া, প্রার্থনা, নুসাইবা, আয়েশা, ইকরা ও হৃদিতা। ‘সুন্দরী কমলা’ গানের সাথে দ্বৈত নাচে অংশ নেন শিক্ষক নিকিতা ও বর্ষা। একক গান ‘তোরে লইয়া যাইমু আমি লন্ডনে’ পরিবেশন করেন শিক্ষক অজয় দাশ।


অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ইংরেজি বিভাগের প্রধান মুহাইমিনুল ইসলাম, ইংরেজির শিক্ষক নুসরাত নিকিতা, বাংলার শিক্ষক সাদিয়া আলমসহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী সাজিদ, মুনতাহা, তাফহিম, কাসফিক, আবিয়াজসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানটির সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এডমিন কো অর্ডিনেটর মোবারক হোসাইন, একাডেমিক কো অর্ডিনেটর সাজ্জাদুল হাসান রবিন, জুনিয়র শাখার কো অর্ডিনেটর সুলতানা নার্গিস।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn