সরকার আরও ঋণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে সহযোগিতা চেয়েছে । নতুন করে ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ চাওয়া হয়েছে। সংস্থাটির প্রতিনিধি দল সম্ভাব্যতা যাচাই করতে সফরে আসছে।
জানা যায়, আইএমএফের সাথে এরইমধ্যে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কার্যক্রম চলমান। যার শর্ত পূরণে সংস্কার কার্যক্রম চলছে। আর এই ঋণের তিনটি কিস্তির ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ইতোমধ্যে ছাড় হয়েছে। ৭টি কিস্তিতে পুরো অর্থ মিলবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। নতুন ঋণের জন্যও আর্থিক খাতের দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চায় এই বহুজাতিক সংস্থা। স্থিতিশীলতার জন্য এ সময় অর্থের বিকল্প নেই বলে মত বিশ্লেষকদের।
পরিবর্তিত অবস্থায় অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে গত ২৯ আগস্ট আইএমএফ উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে চলমান ঋণ বর্ধিত করার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় এ মাসেই ছয় দিনের ঢাকা সফরে আসছে আইএমএফ স্টাফ মিশন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, এগুলো যেন বাণিজ্যিক ঋণ না হয়, কেননা সরকার বাণিজ্যিক ঋণ নেয়ার পরিস্থিতিতে নেই। ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধের একটি কাটামোতে আমরা ঢুকেছি। যত সহজ শর্তই হোক, ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধের কাঠামোটা ভালো লক্ষণ না। বরং এটি একটি দুষ্টু চক্রের ইঙ্গিত দেয়।
ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আইএমএফের নীতির সঙ্গে প্রো-বিজনেস, প্রো-রিফর্মের এক ধরনের সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১ মাসের মধ্যে ব্যাপক ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় বেশকিছু ইতিবাচক সংস্কার করার চেষ্টা করেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংকগুলোকে রিফর্ম করার উদ্যোগ নেয়া এবং একইসাথে এনবিআরের রিফর্ম আমরা দেখতে পাচ্ছি।
রাজস্ব খাতে সংস্কার উদ্যোগ হাতে নেয়া গেলে বাড়ানো সম্ভব অভ্যন্তরীণ আয়। এ নিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আইএমএফ আফ্রিকার কয়েকটি দেশকে নিয়ে যেটা করেছে, কর প্রশাসনকে যদি শক্তিশালী করা যায়, সেভাবে অটোমেশন করা গেলে জিডিপির ২-৩ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করা সম্ভব।
উল্লেখ করার মতো বিষয় হচ্ছে, অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে ঋণ নির্ভরতা বাড়লেও জ্বালানির দেনা পরিশোধে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত অর্থ।