সুফি মিজানুর রহমানের সম্পর্কে যতোই বলা হোক না কেন, তবুও কম বলা হবে। তিনি ৮০ পেরিয়েও এখন কাজ করেন তরুণের মতো। কাজে নেই তাঁর ক্লান্তি। কাজ পাগল মানুষটির আজ শুভ জন্মদিন। পেয়েছেন একুশে পদকও। তাঁর ছেলেরাও আজ সমাজে বিভিন্ন ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দেশ বরেণ্য এ শিল্পপতি, অনেকের আইডল, পথপদর্শক।
সুফি মিজানুর রহমানের বড় সন্তান মোহাম্মদ মহসিন বাবা সম্পর্কে নিজের অভিব্যক্তি জানাতে গিয়ে বলেন, শুধু আমরাই নয় এই দেশের লাখো-কোটি যুবক সুফি মিজানুর রহমানকে পথপদর্শক মনে করেন। দীর্ঘ জীবনে সুফি মিজানুর রহমানের চলার পথ খুব মসৃণ ছিলো না। জীবনের প্রতিটি মূহূর্তের সাথে লড়াই করে শূন্য থেকে শিখরে পৌঁচ্ছেছেন। জীবনের প্রতিটি ধাপে বাবা যতটুকুই শিখেছেন সবটুকুই তারুণ্যের জন্য উৎসর্গ করেছেন। বাস্তব জ্ঞানের মহাসমূদ্র সুফি মিজান। যোগ করেন মহসিন।
সুফি মিজানুর রহমান একাত্তর পরবর্তী সময়ে ব্যবসা শুরু করেন চট্টগ্রাম। এর আগে তিনি একটি ব্যাংকে সামান্য বেতনের চাকরি করতেন। অর্ধশত বছরে ব্যবসায়ি হিসেবে তিনি শুধু তাঁর নিজেকেই গড়েননি। তিনি গড়েছেন সন্তানদেরও। শিক্ষা ও জ্ঞানে সুফি মিজানের ৮ সন্তান আজ ঈর্ষণীয়।
ব্যবসায়ি হিসেবে সুফি মিজানের অর্ধশত বছরের পথচলায় কর্মসংস্থান প্রায় ১০ হাজার মানুষের। এই দশ হাজার মানুষের ওপর নির্ভর করে জীবন নির্বাহ করছেন লাখো পরিবার।
স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত মাত্র দুইজন শিল্প উদ্যোক্তাকে একুশে পদক দেয়া হয়। প্রথম ব্যবসায়ী শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে মরণোত্তর পুরস্কার পেয়েছিলেন দেশের অন্যতম শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্কয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যামসন এইচ চৌধুরী। ২০২০ সালে দ্বিতীয় পুরস্কারটি পেলেন জীবদ্দশায় দেশের আরেক সফল শিল্পপ্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। পিএইচপির বাংলা অর্থ হল, ‘সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধির ছায়া। ’
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সুফি মিজানুর রহমান ব্যবসা শুরু করেন ব্যাংক কর্মকর্তার সামান্য চাকরি ছেড়ে। এ পাঁচ দশকেই তিনি গড়েছেন ৩৩টি প্রতিষ্ঠান। যাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় ১০ হাজার কর্মজীবী। তাঁর গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে লেনদেন করে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। সরকারকে ভ্যাট, শুল্ক ও আয়কর বাবদ প্রতিবছর পরিশোধ করে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
২০টির বেশি কোম্পানিসমৃদ্ধ গ্রুপের নাম দিয়েছেন পিএইচপি-শান্তি, সুখ-সমৃদ্ধির ইংরেজি শব্দের আদ্যাক্ষর দিয়ে। রোববার (১২ মার্চ) তাঁর ৮১তম জন্মদিন। জন্মদিনে কামনা, তিনি আরও অনেক বছর শান্তি, সুখ ও সমৃদ্ধির আদর্শে দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করবেন।
Discussion about this post