ছাত্রলীগ নেত্রীর মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটির ডাকে আবারও ক্যাম্পাসে এসেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন। ঘটনার পর থেকে এ নিয়ে গত পাঁচ দিনে তিনবার ক্যাম্পাসে এসেছেন তিনি। তিনি হল প্রাধ্যক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির সঙ্গে কথা বলেন।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ফুলপরী খাতুন তাঁর বাবা আতাউর রহমানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আসেন। ক্যাম্পাসে ফুলপরীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর জয়শ্রী সেন একটি গাড়িতে করে প্রধান ফটক থেকে তাঁকে হলে নিয়ে আসেন।
এর আগে প্রধান ফটকের সামনে ফুলপরী গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, প্রাধ্যক্ষ ডেকেছেন, এ জন্য তিনি হলে আবার এসেছেন।
কেমন আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী বলেন, ‘খুব ভালো না, খুব খারাপও না। ন্যায়বিচারের দাবিতে যতবার আসা লাগবে, ততবারই আমি আসব। আমি চাই, এই ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থী যেন শান্তিপূর্ণভাবে পড়াশোনা করতে পারে।’
১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে তাঁকে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন ফিন্যান্স বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ভাষ্য, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন। নির্যাতনের সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। ওই ছাত্রী গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
হলে ছাত্রী নির্যাতনে অভিযুক্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেত্রী সানজিদা চৌধুরী (বাঁয়ে) ও তাবাসসুম ইসলাম
নির্যাতনের ঘটনায় এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে সানজিদা ও তাবাসসুম যাতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে না পারেন, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, তবে তদন্তের প্রয়োজনে কমিটি তাঁদের ডাকতে পারবে। পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন আদালত। এরপর ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা ও তাঁর সহযোগী তাবাসসুম ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান।
Discussion about this post